তীব্র শীতে বিপাকে স্কুলগামী শিশু শিক্ষার্থীরা

কয়েকদিন ধরে দেশের বেশির ভাগ এলাকায় শীতের তীব্রতা বেড়েছে। প্রচণ্ড শীতে পূর্ণবয়স্কদের অবস্থা যেখানে জবুথবু সেখানে ভোরে কুয়াশার মধ্যে স্কুলগামী শিশু শিক্ষার্থীদের অবস্থা আরও করুণ। ভোরেই স্কুলে যেতে হয় বলে শিশু শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা পড়েছেন বেশ বিপাকে। 

 

রোববার (৮ জানুয়ারি) সকালে রাজধানীর পুরান ঢাকার কয়েকটি স্কুলে সরেজমিনে গিয়ে শিশু শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগের দৃশ্য চোখে পড়ে। ক্লাস শুরুর নির্ধারিত সময়ের পরেও অনেক বাচ্চাদের তাড়াহুড়ো করে স্কুলে আসতে দেখা যায়। ইচ্ছার বিরুদ্ধে স্কুলে নিয়ে আসায় শিশু শিক্ষার্থীদের অনেককে আবার কান্না করতেও দেখা গেছে।

এ বিষয়ে একাধিক অভিভাবক বলেন, যেখানে প্রাপ্তবয়স্করাই শীতে জবুথবু অবস্থা সেখানে পাঁচ-ছয় বছরের শিশুকে ভোরে ঘুম থেকে উঠিয়ে স্কুলে নিয়ে আসা অমানবিক। বেশিরভাগ শিশু এত শীতের মধ্যে স্কুলে যেতে চায় না।

 

তারা বলেন, এতো সকালে ঠান্ডার মধ্যে স্কুলে যাতায়াতের কারণে বাচ্চাদের ঠান্ডাজনিত সমস্যা দেখা দিয়েছে। যেহেতু শীতের মাত্রা অত্যধিক এবং এটা ক্ষণস্থায়ী। তাই প্রাথমিক স্কুলগুলো বন্ধ রাখলে বাচ্চারা একটু স্বস্তি পেত।

 

পুরান ঢাকার সেন্ট গ্রেগরি হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজের নার্সারিতে ভর্তি হয়েছে ৪ বছর বয়সী মোসাইয়াদুল ইসলাম রাফি। তার বাবা মোস্তফা কামাল বলেন, রাফির ক্লাস শুরু ৮টায়। কিন্তু স্কুলে আসার জন্য ৭টার আগেই তাকে ঘুম থেকে ওঠাতে হয়। এই শীতের সকালে স্কুলে না আসতে চাইলেও একপ্রকার জোর-জবরদস্তি করেই তাকে স্কুলে নিয়ে আসি।

 

শীতের প্রকোপে অনেক শিক্ষার্থীদের চোখ-নাক দিয়ে পানি পড়তেও দেখা যায়। চতুর্থ শ্রেণির জাবেরকে নিয়ে ৭টার আগেই স্কুলের গেটে অবস্থান করছে মা আয়েশা আক্তার। এ সময় জাবেরকে শীতের কারণে কাঁপতে দেখা যায়। আয়েশা আক্তার বলেন, শীতের প্রকোপ না কমা পর্যন্ত স্কুলগুলো বন্ধ রাখা উচিত।

 

সেন্ট গ্রেগরি স্কুলের প্রধান ফাদার উজ্জ্বলের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, এ ভোগান্তি সাময়িক সময়ের জন্য।  আর স্কুল চালু বা বন্ধ রাখা বিষয়ে সরকার সিদ্ধান্ত নেবে। শিক্ষার্থীদের এত সকালে শীত উপেক্ষা করে স্কুলে আসতে বেগ পেতে হলেও প্রাকৃতিক আবহাওয়ার সঙ্গে বাচ্চাদের মানিয়ে নিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

 

তিনি বলেন, আমাদের দেশে যেহেতু শীতের প্রভাব জানুয়ারি মাসে বেশি থাকে। আর এটা বছরের প্রথম হওয়ায় চাইলেও স্কুল বন্ধ রাখা বা শিফট পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। কারণ এ সময় ভর্তি, বই বিতরণসহ নানা কার্যক্রম চলে। যদি স্কুল বন্ধ রাখা হয় তাহলে বাচ্চাদের অনেক পিছিয়ে পড়বে।

সূএ:ঢাকা পোস্ট ডটকম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» ট্রাকের ধাক্কা, হত্যাচেষ্টা দাবির ব্যাখ্যা দিলেন সারজিস

» রামপুরা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ককে গুলি

» সীমান্তের ওপারে বসে আছে ফ্যাসিস্ট, করছে নতুন নতুন চক্রান্ত : মির্জা ফখরুল

» গণঅভ্যুত্থানে সৃষ্ট ঐক্য কোনো ষড়যন্ত্রে যেন বিনষ্ট না হয় : জামায়াত আমির

» বাসা থেকে অস্ত্র-গুলি উদ্ধার

» নিলামে ৭২ কোটিতে কেনা কলা খেয়ে ফেললেন ক্রেতা

» ঘূর্ণিঝড় ‘ফিনজাল’-এ রূপ নিল গভীর নিম্নচাপ

» আওয়ামী লীগের কোনো ষড়যন্ত্র বাংলাদেশে বাস্তবায়ন হতে দেব না : মাসুদ সাঈদী

» আইনজীবী হত্যায় কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না : ধর্ম উপদেষ্টা

» ইসকনের বিরুদ্ধে বলা মানে হিন্দু ভাইদের বিরুদ্ধে বলা নয় : হেফাজত

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

তীব্র শীতে বিপাকে স্কুলগামী শিশু শিক্ষার্থীরা

কয়েকদিন ধরে দেশের বেশির ভাগ এলাকায় শীতের তীব্রতা বেড়েছে। প্রচণ্ড শীতে পূর্ণবয়স্কদের অবস্থা যেখানে জবুথবু সেখানে ভোরে কুয়াশার মধ্যে স্কুলগামী শিশু শিক্ষার্থীদের অবস্থা আরও করুণ। ভোরেই স্কুলে যেতে হয় বলে শিশু শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা পড়েছেন বেশ বিপাকে। 

 

রোববার (৮ জানুয়ারি) সকালে রাজধানীর পুরান ঢাকার কয়েকটি স্কুলে সরেজমিনে গিয়ে শিশু শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগের দৃশ্য চোখে পড়ে। ক্লাস শুরুর নির্ধারিত সময়ের পরেও অনেক বাচ্চাদের তাড়াহুড়ো করে স্কুলে আসতে দেখা যায়। ইচ্ছার বিরুদ্ধে স্কুলে নিয়ে আসায় শিশু শিক্ষার্থীদের অনেককে আবার কান্না করতেও দেখা গেছে।

এ বিষয়ে একাধিক অভিভাবক বলেন, যেখানে প্রাপ্তবয়স্করাই শীতে জবুথবু অবস্থা সেখানে পাঁচ-ছয় বছরের শিশুকে ভোরে ঘুম থেকে উঠিয়ে স্কুলে নিয়ে আসা অমানবিক। বেশিরভাগ শিশু এত শীতের মধ্যে স্কুলে যেতে চায় না।

 

তারা বলেন, এতো সকালে ঠান্ডার মধ্যে স্কুলে যাতায়াতের কারণে বাচ্চাদের ঠান্ডাজনিত সমস্যা দেখা দিয়েছে। যেহেতু শীতের মাত্রা অত্যধিক এবং এটা ক্ষণস্থায়ী। তাই প্রাথমিক স্কুলগুলো বন্ধ রাখলে বাচ্চারা একটু স্বস্তি পেত।

 

পুরান ঢাকার সেন্ট গ্রেগরি হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজের নার্সারিতে ভর্তি হয়েছে ৪ বছর বয়সী মোসাইয়াদুল ইসলাম রাফি। তার বাবা মোস্তফা কামাল বলেন, রাফির ক্লাস শুরু ৮টায়। কিন্তু স্কুলে আসার জন্য ৭টার আগেই তাকে ঘুম থেকে ওঠাতে হয়। এই শীতের সকালে স্কুলে না আসতে চাইলেও একপ্রকার জোর-জবরদস্তি করেই তাকে স্কুলে নিয়ে আসি।

 

শীতের প্রকোপে অনেক শিক্ষার্থীদের চোখ-নাক দিয়ে পানি পড়তেও দেখা যায়। চতুর্থ শ্রেণির জাবেরকে নিয়ে ৭টার আগেই স্কুলের গেটে অবস্থান করছে মা আয়েশা আক্তার। এ সময় জাবেরকে শীতের কারণে কাঁপতে দেখা যায়। আয়েশা আক্তার বলেন, শীতের প্রকোপ না কমা পর্যন্ত স্কুলগুলো বন্ধ রাখা উচিত।

 

সেন্ট গ্রেগরি স্কুলের প্রধান ফাদার উজ্জ্বলের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, এ ভোগান্তি সাময়িক সময়ের জন্য।  আর স্কুল চালু বা বন্ধ রাখা বিষয়ে সরকার সিদ্ধান্ত নেবে। শিক্ষার্থীদের এত সকালে শীত উপেক্ষা করে স্কুলে আসতে বেগ পেতে হলেও প্রাকৃতিক আবহাওয়ার সঙ্গে বাচ্চাদের মানিয়ে নিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

 

তিনি বলেন, আমাদের দেশে যেহেতু শীতের প্রভাব জানুয়ারি মাসে বেশি থাকে। আর এটা বছরের প্রথম হওয়ায় চাইলেও স্কুল বন্ধ রাখা বা শিফট পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। কারণ এ সময় ভর্তি, বই বিতরণসহ নানা কার্যক্রম চলে। যদি স্কুল বন্ধ রাখা হয় তাহলে বাচ্চাদের অনেক পিছিয়ে পড়বে।

সূএ:ঢাকা পোস্ট ডটকম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com